ভিডিও গেমের দুনিয়া থেকে উঠে আসা এমন কিছু চলচ্চিত্র?

জনপ্রিয় গেম নিয়ে এখন তৈরি হচ্ছে চলচ্চিত্র, সেগুলো দারুণ সফলও হয়েছে বটে! গেমারদের সাথে সাথে সাধারণ দর্শকও লুফে নিয়েছেন সেসব চলচ্চিত্র। ভিডিও গেমের দুনিয়া থেকে উঠে আসা এমন কিছু চলচ্চিত্র নিয়ে এই আয়োজন-

ম্যাক্স পেইন

ধুন্ধুমার মারপিটের কম্পিউটার গেম যারা পছন্দ করেন, তারা নিশ্চয়ই এক নামে চেনেন ম্যাক্স পেইনকে। মূল চরিত্র ম্যাক্স পেইন নিউইয়র্কের অপরাধ জগতে খুঁজে ফিরছে তার খুন হওয়া স্ত্রী-সন্তানের খুনিকে। আর এই সাসপেন্সে ভরা গেমের কাহিনী উঠে এসেছে রুপালি পর্দায়। পুলিশ অফিসার ম্যাক্স পেইন রূপে দর্শকদের সামনে হাজির হয় মার্ক ওয়ালবার্গ। ভয়ংকর সব অপরাধীর সাথে এবার অতিপ্রাকৃতিক শক্তির সাথে লড়াই করতে হয় তাকে।

জন মুরের পরিচালনায় ম্যাক্স পেইন মুক্তি পায় ২০০৮ সালে। সমালোকচকদের কাছে খুব একটা পাত্তা না পেলেও দর্শকরা কিন্তু লুফে নিয়েছে তাদের ম্যাক্স পেইনকে!

রেসিডেন্ট ইভিল সিরিজ

 

রেসিডেন্ট ইভিল সিরিজ

ভয়ংকর টি-ভাইরাসে আক্রান্ত পৃথিবী। ভাইরাস-কবলিত মানুষ পরিণত হয় বীভৎস জোম্বিতে। আর এই ঘটনার সাথে জড়িত ‘আমব্রেলা করপোরেশন’ নামের এক প্রতিষ্ঠান। এই আমব্রেলা করপোরেশন এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে ত্রাণকর্তা হিসাবে আবির্ভূত হন অ্যালিস। এমনই কাহিনী নিয়ে এগিয়ে যায় রেসিডেন্ট ইভিল গেমের কাহিনী। অ্যাকশন এই গেম সিরিজ নিয়ে হলিউডে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র। তবে একটি-দুটি নয়, গুনে গুনে পাঁচটি!

অ্যালিস চরিত্রে রূপদানকারী মিলা জভোভিচ নিজেকে পুরোদস্ত অ্যাকশন হিরোইন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এই সিরিজের মধ্য দিয়েই। দর্শকপ্রিয় এই চলচ্চিত্র সিরিজ সারা দুনিয়াব্যাপী আয় করে নিয়েছে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার, যা কোনো ভিডিও গেম থেকে বানানো মুভি সিরিজের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ! তবে আগামী বছর সিরিজের ষষ্ঠ কিস্তি দ্য ফাইনাল চ্যাপ্টারের মধ্য দিয়ে শেষ হতে যাচ্ছে রেসিডেন্ট ইভিল অধ্যায়।

নিড ফর স্পিড

 

নিড ফর স্পিড

দুরন্ত সব রেসিং কার নিয়ে গেমের জগতে যাদের দাপিয়ে বেড়ানোর স্বভাব, তাদের কাছে নিড ফর স্পিড বহুপরিচিত এক নাম। নিত্য নতুন সব রেসিং কার আর চ্যালেঞ্জ নিয়ে এই রেসিং গেম সিরিজের বেশ কয়েকটি গেম বানিয়েছে ডেভেলপার কোম্পানি। ভার্চুয়াল জগতের সড়ক-মহাসড়ক কাঁপিয়ে হাজির হয়েছে সেলুলয়েড জগতেও। স্কট ওয়াহ পরিচালিত এই চলচ্চিত্র মুক্তি পায় গেল বছর।

মূল চরিত্রে অভিনয় করেন ব্রেকিং ব্যাড-খ্যাত অ্যারন পল, স্ট্রিট রেসার চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। মূল গেমের সাথে কাহিনীর অমিল থাকলেও দুর্দান্ত সব কার রেসিংয়ের অভাব ছিল চলচ্চত্রটিতে।

প্রিন্স অব পার্সিয়া

 

প্রিন্স অব পার্সিয়া

থার্ড পারসন অ্যাকশন অ্যাডভেঞ্চার গেমের জগতে এক জনপ্রিয় নাম প্রিন্স অব পার্সিয়া। বিশ্বব্যাপী প্রায় ২০ মিলিয়ন কপি এই গেম সিরিজের। তুমুল জনপ্রিয় কোনো গেমকে চলচ্চিত্রে রূপদান হলিউডে এক ধরনের নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে তালিকা থেকে বাদ পড়েনি প্রিন্স অব পার্সিয়াও।

মাইক নিওয়েল পরিচালিত এই চলচ্চিত্র দর্শকদের সামনে উন্মুক্ত হয় ২০১০ সালে। প্রিন্স অব পার্সিয়া রূপে আবির্ভূত হন জ্যাক জিলেনহাল। তরবারির কারুকাজ দিয়ে তিনি প্রমাণ করে ছেড়েছেন, তিনিই পারস্যের পারফেক্ট রাজপুত্তুর!

টুম্ব রেইডার সিরিজ

 

টুম্ব রেইডার সিরিজ

ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ লারা ক্রফটকে নিয়ে এই গেম ফ্র্যাঞ্চাইজির কাহিনী। শুধু প্রত্নতত্ত্ববিদ নয়; শত্রুকে ঘায়েল করার বিভিন্ন কলাকৌশলে সিদ্ধহস্ত সে, বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারেও পটু, চোস্ত টানে কথা বলতে পারেন কয়েকটি ভাষায়। ১৯৯৬ সালে সিরিজের প্রথম গেম বের হওয়ার সাথে সাথেই আলোড়ন ফেলে গেমারদের মধ্যে। লারা ক্রফট চরিত্রটি গেমের দুনিয়ায় অল্প সময়েই আইকনে পরিণত হয়।

গেমের জগত থেকে বড়পর্দায় এসেও কিন্তু কম মাতায়নি লারা ক্রফট। হলিউড হার্টথ্রব অ্যাঞ্জেলিনা জোলি হাজির হন লারা ক্রফট রূপে। দুঃসাহসিক সব অভিযানে বেড়িয়ে পড়েন তিনি, খোঁজ করেন বিভিন্ন অতিপ্রাকৃত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন; তবে বাঁধ সাধে বিভিন্ন শত্রু! লারা ক্রফট কম যান কিসে, ঠিকই ঘায়েল করে ফেলেন সেসব শত্রুকে।

২০০১ এবং ২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিরিজের দুটি কিস্তি দিয়েই অ্যাঞ্জেলিনা জোলি নিজেকেই চিনিয়েছেন অ্যাকশন হিরোইন হিসেবে। দর্শকপ্রিয় এই চলচ্চিত্রের আয় ৩০০ মিলিয়ন ডলার ছুই ছুই।

অ্যাংরি বার্ডস

 

অ্যাংরি বার্ডস

স্মার্টফোনের জগতে রীতিমতো ঝড় তুলে দেওয়া গেমটির নাম অ্যাংরি বার্ডস। ডিমচোর দুষ্টু শুকরছানাদের শায়েস্তা করতে নামে কয়েক প্রজাতির পাখি। হলদে, লাল, কালো-বাহারি রঙের সব পাখির শুধু একটাই সাধারণ বৈশিষ্ট্য- সবাই দারুণ ক্ষ্যাপাটে। ছেলেবুড়ো সবাই এসব রাগী রাগী পাখির ভীষণ প্রেমে পড়ে যায়, ফলাফল প্রায় ২০০ মিলিয়ন বার ডাউনলোড।

ক্ষ্যাপাটে পাখিরা এবার আসবে চলচ্চিত্রের পর্দায়। আগামী বছর মুক্তি পেতে যাচ্ছে জনপ্রিয় এই গেমের ফিল্মি সংস্করণ। তবে লাইভ অ্যাকশন নয়, তারা আসবে অ্যানিমেটেড হয়ে। দেখা যাক, অ্যাংরি বার্ডসরা কতটা ‘অ্যাংরি’ রূপে হাজির হয়!

হিটম্যান

 

হিটম্যান

ভয়ংকর এক খুনি সে, গুরুত্বপূর্ণ সব ব্যক্তিকে হত্যার জন্য তার ডাক পড়ে। এই ভয়ংকর খুনিকে তৈরি করা হয়েছে জেনিটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বহু কলাকৌশলে। এই আততায়ীর জন্য একটি বিশেষ নাম বরাদ্দ আছে, এজেন্ট ৪৭। গেমারদের শ্বাসরুদ্ধকর সব মিশনে বের হয়ে পড়তে হয় এজেন্ট ৪৭ কে নিয়ে।

Leave a Reply